টার্ম পেপার লেখার নিয়ম | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্সের জন্য।

টার্ম পেপার লেখা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক কাজ। এটি শিক্ষার্থীদের গবেষণার দক্ষতা এবং জ্ঞান প্রয়োগের ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য একটি কার্যকর মাধ্যম।

এই লেখায় টার্ম পেপার তৈরির নিয়মাবলী এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হবে, যা আপনাকে সফলভাবে এটি তৈরি করতে সাহায্য করবে।

টার্ম পেপার কি?

এটি একটি একাডেমিক অ্যাসাইনমেন্ট, যা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর গবেষণা ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা প্রদর্শন করতে সাহায্য করে।

মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য টার্ম পেপার লেখার প্রয়োজনীয়তা এবং তা কীভাবে তৈরি করতে হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

১. টার্ম পেপারের কাঠামো বা নমুনা

একটি পূর্ণাঙ্গ টার্ম পেপারের কাঠামো কিছু নির্দিষ্ট অংশে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি অংশের গুরুত্ব এবং লেখা পদ্ধতি সম্পর্কে জানলে আপনি আরো সুনিপুণভাবে আপনার গবেষণা কর্মটি তৈরি করতে পারবেন। নিচে প্রতিটি অংশের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:

আরো পড়ুন:- টার্ম পেপারের কাঠামো ইংজেীতে লেখা কেমন হয় দেখুন

১.১ টার্ম পেপারের Cover Page (কাভার পৃষ্ঠা)

গবেষণা কর্মের প্রথম পৃষ্ঠা হচ্ছে কাভার পৃষ্ঠা। এতে আপনার নাম, রোল নম্বর, কোর্স নাম, বিষয়বস্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, বিভাগের নাম, শিক্ষক/তত্ত্বাবধায়কের নাম এবং জমা দেওয়ার তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

নিচে একটি টার্ম পেপারের কাভার পেজ এর নমুনা দেওয়া হলো।

Term Paper cover Page Bangla এর ছবি
Term Paper cover Page Bangla

১.২ টার্ম পেপারের Student’s Declaration (শিক্ষার্থীর ঘোষণাপত্র)

এটি একটি এক পৃষ্ঠার ডিক্লারেশন যেখানে আপনি জানান যে, এই টার্ম পেপারটি আপনার নিজস্ব কাজ এবং আপনি কোথাও থেকে কপি করেননি।

একটি টার্ম পেপারের ঘোষণাপত্রের নমুনা দেওয়া হলো।

টার্ম পেপার ঘোষণাপত্র এর ছবি
টার্ম পেপার ঘোষণাপত্র এর ছবি

১.৩ টার্ম পেপারের Acceptance Letter (তত্বাবধায়কের প্রত্যয়নপত্র)

এই অংশে আপনার টার্ম পেপারের তত্ত্বাবধায়ক শিক্ষক আপনার কাজের অনুমোদন দিবেন তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এখানে একটি টার্ম পেপারের প্রত্যয়নপত্রের নমুনা দেওয়া হলো।

টার্ম পেপারের প্রত্যয়নপত্র এর ছবি
প্রত্যয়নপত্র

১.৪ টার্ম পেপারের Acknowledgment (কৃতজ্ঞতা স্বীকার)

এখানে আপনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন যারা আপনাকে এই টার্ম পেপার লেখার কাজে সাহায্য করেছেন, যেমন আপনার শিক্ষক, সহপাঠী, পরিবারের সদস্য এবং অন্যান্য সহায়কদের নাম উল্লেখ করবেন।

নিচে একটি টার্ম পেপারের কৃতজ্ঞতা স্বীকারের নমুনা দেওয়া হলো।

টার্ম পেপারের কৃতজ্ঞতা স্বীকার
কৃতজ্ঞতা স্বীকার

১.৫ টার্ম পেপারের Preface (মুখবন্ধ)

মুখবন্ধ বা Preface হলো একটি একাডেমিক বা গবেষণামূলক কাজের শুরুতে লেখা এমন একটি অংশ, যেখানে লেখক নিজের কাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলেন।

নিম্নে একটি টার্ম পেপারের মুখবন্ধ এর নমুনা দেওয়া হলো।

টার্ম পেপারের মুখবন্ধ এর নমুনা ছবি
মুখবন্ধ

১.৬ টার্ম পেপারের Abstract (সারসংক্ষেপ)

সারসংক্ষেপ, যা ইংরেজিতে Abstract নামে পরিচিত, হলো একটি গবেষণাপত্র, টার্ম পেপার, থিসিস বা রিপোর্টের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এটি মূল লেখার শুরুতেই যুক্ত করা হয় এবং এতে পুরো কাজের মূল উদ্দেশ্য, গবেষণা পদ্ধতি, ফলাফল এবং উপসংহারের সারকথা থাকে।

সারসংক্ষেপের মূল বৈশিষ্ট্য:
সংক্ষিপ্ত: সাধারণত ২০০-৩০০ শব্দের মধ্যে হয়।
স্বতন্ত্র: পাঠক শুধু সারসংক্ষেপ পড়েই পুরো লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পায়।
তথ্যসমৃদ্ধ: এতে বিষয়বস্তু, গবেষণার লক্ষ্য, ব্যবহৃত পদ্ধতি, মূল ফলাফল এবং উপসংহার স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

১.৭ টার্ম পেপারের Table of Contents (সূচীপত্র)

এখানে টার্ম পেপারের বিভিন্ন অংশ, অধ্যায় এবং তাদের পৃষ্ঠা নম্বর থাকবে যাতে সহজে যেকোনো অংশ খুঁজে পাওয়া যায়।

Term Paper Table Of Content এর ছবি
Term Paper Table Of Content

১.৮ Body of the Term Paper (মূল অংশ)

এটি টার্ম পেপারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আপনি আপনার গবেষণার বিষয়বস্তু, তত্ত্ব, তথ্য এবং বিশ্লেষণ দিবেন। মূল অংশটি সাধারণত ২৫-৩০ পৃষ্ঠার মধ্যে হয় এবং এটি বিভিন্ন অধ্যায়ে ভাগ করা হয়।

১.৯ Conclusion (উপসংহার)

এখানে আপনি আপনার গবেষণার মূল আলোচনা উপস্থাপন করবেন এবং এটি থেকে কী শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে তা উল্লেখ করবেন।

১.১০ Reference (গ্রন্থপুঞ্জি)

এখানে আপনি আপনার টার্ম পেপারে ব্যবহৃত সকল উৎসের বিস্তারিত তথ্য দেবেন, যাতে অন্যরা আপনার গবেষণার সূত্র দেখতে পারে।

১.১১ Appendix (পরিশিষ্ট)

যদি কোনো অতিরিক্ত তথ্য বা ডেটা থাকে যা মূল অংশে জায়গা পায়নি, তবে তা আপনি পরিশিষ্টে যুক্ত করতে পারেন।

২. টার্ম পেপার লেখার প্রক্রিয়া

গবেষণা কর্মটি লেখার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়, যা আপনাকে একটি সুশৃঙ্খল এবং কার্যকর পেপার তৈরি করতে সহায়তা করবে।

নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

২.১ টার্ম পেপারের বিষয় নির্বাচন

গবেষণা কর্মটি লেখার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট এবং গবেষণাযোগ্য বিষয় নির্বাচন করতে হবে। বিষয়টি এমন হওয়া উচিত যা আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারেন এবং এতে নতুন কিছু আলোচনার সুযোগ থাকে।

২.২ গবেষণা করা

আপনার নির্বাচিত বিষয়ে ভালোভাবে গবেষণা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি বিভিন্ন প্রামাণিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং সেগুলোকে আপনার পেপারে সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন।

২.৩ থিসিস স্টেটমেন্ট তৈরি

একটি শক্তিশালী থিসিস স্টেটমেন্ট তৈরি করুন যা আপনার টার্ম পেপারের মূল ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

২.৪ আউটলাইন তৈরি

পেপারের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট আউটলাইন তৈরি করুন, যাতে আপনার লেখা সঠিকভাবে সাজানো থাকে এবং কোন অংশ কোন বিষয়ে আলোচনা করবে তা নির্ধারণ করা যায়।

২.৫ টার্ম পেপার লেখার শুরু

এখন আপনি পেপারের প্রতিটি অংশ একে একে লিখতে শুরু করতে পারেন, প্রাথমিকভাবে একটি খসড়া তৈরি করুন।

২.৬ সম্পাদনা এবং প্রুফরিডিং

পেপার লেখার পরে, সেটি সম্পাদনা করুন এবং প্রুফরিডিং করুন। এখানে ভাষা, ব্যাকরণ, স্পেলিং এবং যুক্তির সঠিকতা যাচাই করুন।

৩. টার্ম পেপার প্রস্তুতির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

সময় ব্যবস্থাপনা: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য সময় ভাগ করে নিন।
যথাযথ রেফারেন্সিং: সব তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করুন এবং রেফারেন্স স্টাইল অনুযায়ী রেফারেন্স দিন।
স্পষ্ট এবং সোজাসাপ্টা ভাষা ব্যবহার: জটিল ভাষার পরিবর্তে স্পষ্ট এবং সহজ ভাষা ব্যবহার করুন।
নিজের চিন্তা প্রকাশ করুন: কেবল অন্যদের মতামত নয়, আপনার নিজস্ব বিশ্লেষণ এবং চিন্তা প্রকাশ করুন।

টার্ম পেপার অর্ডার করতে যোগাযোগ করুন:

সকল ডিপার্টমেন্ট এর টার্ম পেপার তৈরি করা হয়।
🌐 ওয়েবসাইট: https://researchpaperbd.com/
📱 WhatsApp: 01763-437759
📧 ইমেইল: contact@researchpaperbd.com

Subscribe Our YouTube channel

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top